রাতের পোশাক, যা সাধারণত নাইটি নামে পরিচিত, হলো এমন একটি পরিধান যা রাতে ঘুমানোর সময় আরামদায়কভাবে পরা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শরীরকে শিথিলতা প্রদান করা এবং ঘুমের মান উন্নত করা।
রাতের পোশাকের ইতিহাস
নাইটির উৎপত্তি ভিক্টোরিয়ান যুগে। তখন ধনী পরিবারের নারীরা লম্বা হাতা এবং গোড়ালি পর্যন্ত লম্বা নাইটগাউন পরতেন, যা শীতের রাতে শরীরকে উষ্ণ রাখত। ১৯২০-এর দশকে, রাতের পোশাকের নকশা দিনের পোশাকের অনুকরণে তৈরি হতে থাকে। ১৯৩০-এর দশকে হলিউডের গ্ল্যামারের প্রভাবে সিল্ক, লেস এবং পশম সজ্জিত নাইটগাউন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে, ১৯৬০-এর দশকে, ফ্যাশন জগতে বিপ্লবের ফলে নাইটগাউন খর্ব হয়ে ‘বেবিডল’ নামে পরিচিত কামোদ্দীপক পোশাকের প্রচলন হয়।
বাংলাদেশে রাতের পোশাকের প্রচলন
বাংলাদেশে রাতের পোশাকের প্রচলন মূলত ঔপনিবেশিক আমলে শুরু হয়, যখন পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাব সমাজের উচ্চবিত্ত মহলে প্রবেশ করে। প্রথমে এটি ধনী পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, সময়ের সাথে সাথে মধ্যবিত্ত ও সাধারণ জনগণের মধ্যেও এর ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে, নাইটি বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় রাতের পোশাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
রাতের পোশাকের বিবর্তন
নাইটির বিবর্তন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে ঘটেছে। প্রথমে এটি শুধুমাত্র ধনী নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, পরবর্তীতে এটি সাধারণ নারীদের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। নাইটির নকশা ও উপকরণেও পরিবর্তন এসেছে; সিল্ক, সাটিন, লেস ইত্যাদি উপকরণের পাশাপাশি সুতির ব্যবহারও বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া, নাইটির দৈর্ঘ্য, হাতার ধরন এবং সজ্জায়ও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
INSCRIPT
রাতের পোশাকের উপকারিতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি শরীরের বায়ুপ্রবাহ বাড়ায়, যা ঘুমের মান উন্নত করে এবং শরীরের বর্জ্য উপাদান নির্গমনে সহায়তা করে। তাই, রাতে সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা পোশাক পরা উত্তম।
সমসাময়িক সময়ে রাতের পোশাক
বর্তমানে, রাতের পোশাক শুধুমাত্র ঘুমানোর জন্য নয়, বরং বাড়িতে আরামদায়কভাবে সময় কাটানোর জন্যও ব্যবহৃত হয়। লাউঞ্জওয়্যার এবং বাইরের পোশাকের মধ্যে সীমানা অস্পষ্ট হওয়ার কারণে, রাতের পোশাকের পাজামা আধুনিক কমনীয়তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
উপসংহার
রাতের পোশাকের ইতিহাস ও বিবর্তন আমাদের সংস্কৃতি ও ফ্যাশনের পরিবর্তনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আধুনিক সময়ে, আরাম ও স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে রাতের পোশাকের ডিজাইন ও ব্যবহার আরও বৈচিত্র্যময় হয়েছে। তাই, সঠিক রাতের পোশাক নির্বাচন আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।